Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

উত্তরবঙ্গের কৃষি

চাকরি জীবন থেকে অবসর নিলেও কৃষির প্রতি মোহ থেকে অবসর নিতে পারিনি। সময় পেলেই নতুন কৃষি, বিশেষ কৃষি এবং ঐতিহ্যবাহীর কৃষিকে জানার আগ্রহ এখনও কমেনি। এ মানসিকতাকে ধারণ করে লালন করে পথ চলছি। কয়দিন আগে উত্তরবঙ্গ ঘুরে এলাম। সেখানকার কৃষি সংশ্লিষ্ট মানুষ বেশ সহযোগিতা করেছিল। সেখানে কৃষির এত অফুরন্ত ভাণ্ডার আর বিশেষত্ব আছে এতদিন আমার অজানা ছিল। বেশ কয়দিন সেখানে সংশয় কাটিয়ে এতটুকু শুধু বলতে পারি একটু সুষ্ঠু পরিকল্পনা আর ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে পারলে উত্তরবঙ্গের কৃষি আমাদের টোটাল কৃষিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে। উত্তরবঙ্গের কৃষির সংক্ষিপ্ত চিত্র তুলে ধরলাম কৃষির বৃহত্তর স্বার্থে।
প্রাচীন সূর্যপুরী আম : ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী  উপজেলার হরিণমারী বর্ডার গ্রাম। ওপারে ভারতের বিহার রাজ্য। দুই বিঘে জমিজুড়ে রয়েছে শতাব্দী প্রাচীন সূর্যপুরী আম গাছ। কৌতুহলী হয়েই গাছটি দেখতে যাওয়া। জুনের ১ম  সপ্তাহ ২০১৬। প্রতিটি মগডালে পরিপক্ব আম। পাহাড় সদৃশ দৈত্যাকার গাছের ডালে ডালে আম আর আম। আমের  আকার-আকৃতি কম বেশি একই রকম। প্রতিটি আম ১৫০-২০০ গ্রাম হতে পারে মনে হলো। গাছের গোড়া থেকে বের হওয়া প্রকা- ডালগুলো কিছু দূর গিয়ে আনুভূমিক হয়ে (Horizontall) অনেক জায়গাজুড়ে মাটিতে শায়িত থেকে  পুনরায় মাথা উঁচু করে নতুন নতুন শাখাপ্রশাখা মেলে  দাঁড়িয়ে রয়েছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, গাছটির বয়স আনুমানিক ২০০ বছর। প্রাচীন সূর্যপুরী আমগুলো জুনের শেষ দিকে পাকবে।  অতি মিষ্টি স্বাদের  আমটিতে কোনো আঁশ নেই, আঁটি পাতলা। সাইজ মাঝারি ছোট  হওয়ায় রপ্তানিযোগ্য। হরিণমারী আসা যাওয়ার পথে রাস্তার দুই ধারে প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই সূর্যপুরীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা  গেল। আমটির আরও একটি বিশেষ গুণ হলো প্রতি বছর ফল ধরে। ‘অলটারনেট বিয়ারিং’ চরিত্রের নয় যাতে এক বছর ফল ধরার পরের  বছরে ফল কম অথবা না ধরার রীতি। গাছের মালিকের  সাক্ষাৎ পাইনি। বর্তমান মালিক মো. সাইদুর রহমানের  টিভি  সাক্ষাৎকারে শুনেছি গাছটিতে প্রতি বছর ১৫০-২০০ মণ আম  হয়। বাগান পরিচর্যা তথা পাহারার কাজে নিয়োজিত কর্মচারীদের নিকট থেকে জানা গেল ফলগুলো নিলামে বিক্রি হয়। প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে অনেক দর্শনার্থী আসেন গাছটি  দেখতে। পদস্থ কর্মকর্তা, মিডিয়াম্যান, আমচাষিসহ উৎসুক লোকের ভিড় লেগেই থাকে। প্রবেশ মূল্য ১০ টাকা। তাতেও দর্শনার্থীর কমতি নেই। প্রবেশ পথে টিনের ঘেরা দেয়া। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পদস্থ কর্মকর্তারা জানালেন স্থানীয় নার্সারিগুলোতে সূর্যপুরী আমের কলম পাওয়া যায়। ব্যাপক আবাদ হয় দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও এবং পঞ্চগড় জেলায়। দেশের  প্রধান  প্রধান আম উৎপাদনকারী অঞ্চল তথা সারা দেশে সম্প্রসারণ করা সম্ভব হলে ফলের চাহিদা অনেকাংশে পূরণ হতে পারে। যেহেতু ফলটি উত্তরবঙ্গের একটি জনপ্রিয় জাত এবং প্রতি বছর অধিক ফলন পাওয়া যাচ্ছে, সর্বোপরি রপ্তানিযোগ্য, তাই এর ব্যাপক বংশবিস্তারের মাধ্যমে বাণিজ্যিক চাষাবাদের সুযোগ রয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নীতিনির্ধারণীমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নিতে পারে। পাশাপাশি ফল রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো এ বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারে। গুটিকলমের মাধ্যমে বর্তমান চাহিদা পূরণ হচ্ছে। সারা দেশে ব্যাপক বিস্তৃতির প্রয়োজনে সম্ভাব্যতা যাচাই সাপেক্ষে মাতৃগাছ থেকে টিস্যু কালচার করে অফুরন্ত চারা সরবরাহ করা যেতে পারে।
খাসিয়া কমলা, মাল্টা : কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কমলা প্রজেক্ট পঞ্চগড়  এলাকায় ব্যাপক  সফলতা  পেয়েছে। বিভিন্ন  মিডিয়া  এরই মধ্যে এ  নিয়ে অনেক  প্রতিবেদন  লিখেছে, এবং সম্প্রচার  করেছে। জুলাই ২০১৬ এর  শেষ  সপ্তাহে  প্রকল্প এলাকার  একটি  বাগান দেখার  সুযোগ  হলো। সদর  উপজেলার হাঁড়িভাষা  ইউনিয়নের একটি  বাগান পরিদর্শনের সুযোগে চাষি   হাবিব-উন-নবী  ২০০৯ সালে  বাগানটি  প্রতিষ্ঠা  করেছেন। পূর্ণ সফলতা  পেতে  ৬-৭  বছর   সময়  লেগেছে। কমলা আর  মাল্টার প্রতিটি  গাছ  এখন  ফলে  ভরা। বসতঘরের পাশের একটি  মাল্টা  গাছে  বার  মাস ফল  হয়। পাকা ফল  ছিঁড়ে  এনে  খাওয়ালেন।  বেশ  মিষ্টি স্বাদের  ফল। ছায়াবৃক্ষ হিসেবে মেহগনি, সুপারি, সুপারি  গাছে  খাসিয়  পান  বেশ  লাগছে। কৃষি  সম্প্রসারণ  অধিদপ্তরের  নিবিড় তত্ত্বাবধানে  তিনি  আজ সফলতার  শীর্ষে। সস্ত্রীক  বাগান  পরিচর্য়া  করছেন। বাংলাদেশের  কমলা  বলতে  এক  সময়  সিলেটের  ছাতকের  কমলাকেই বোঝাত। যা  চাহিদার তুলনায়  ছিল  খুবই  অপ্রতুল। কৃষি  সম্প্রসারণ  অধিদপ্তরের  কমলা  প্রজেক্ট খ্যাত  বিশেষ  কর্মসূচির  ব্যাপক  সফলতার  ফলে সাইট্টাস গোত্রের কমলা ও  মাল্টা  আজ  আমাদের দেশি  ফলের  মর্যাদা  লাভ  করেছে। সিলেট  বা চট্টগ্রাম  অঞ্চলের  পার্বত্য  এলাকায় যেমনটি দেখা  যায়  ঠিক  অবিকল ফলন দেখা গেল  পঞ্চগড়ের বাগানটিতে। অধিক বিনিয়োগ এবং  দীর্ঘমেয়াদের  ফসল  বিধায়  অপেক্ষাকৃত সচ্ছল কৃষক ছাড়া  কমলা-মাল্টা  চাষ সম্ভব নয়। লাভের  মুখ   দেখতে ৫-৬ বছর  সময়  লাগছে। কমলা-মাল্টা বাগানে সাথী  ফসল হিসেবে পেঁপে, সিডলেস লেবু, বড় এলাচ,  ছোট আকৃতির চায়না কমলা আর মরিচ দেখা গেল। আগামী  অক্টাবর থেকে  রাসায়নিক  সারের  পরিবর্তে ভার্মি কম্পোস্ট সার প্রয়োগ করে মালচিং করার পরামর্শ দেয়া হয়। যেহেতু পঞ্চগড় জেলায় খাসিয়া জাতের কমলা, মাল্টার সফল আবাদ সম্ভব হয়েছে, তাই পার্শ্ববর্তী জেলা ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুরসহ বৃহত্তর রাজশাহী অঞ্চলে আবাদ সম্প্রসারণ করা যেতে পারে।
লটকনের ২য় রাজধানী পঞ্চগড় :  জনপ্রিয়  লটকন  ফলটি  নরসিংদী  জেলার  একক  ফসল  হিসেবেই  পরিচিত। টকমিষ্টি স্বাদের এ ফলটি এরই মধ্যে রফতানিযোগ্য  ফলের  তালিকাভুক্ত  হয়েছে।  কমলা  বাগানের   অপর    সেডট্টি (ছায়া  বৃক্ষ) লটকনের  ফলভরা  গাছ  দেখে  আমি  নিজেই  অবাক  বিস্ময়ে  তাকিয়ে  রই।  গাছ থেকে  ছিঁড়ে  এনে  সদ্য  পাকা  ফল  খাইয়ে  চাষি  দম্পতি  গর্ব  করেই  বললেন  আমাদের  লটকন সেরা। সদ্য পাকা  ফল বেশ মিষ্টি লাগল। এ অঞ্চলে লটকনের বাণিজ্যিক আবাদ হয় এটা জানাই ছিল না। ফলন প্রচুর, গাছ  ভরা  ফল। আকারে বড়-ছোট মিলিয়ে যেন মালা গেঁথে  রয়েছে। বাণিজ্যিক আবাদের বিষয়ে পরে স্থানীয়  ফল  বাজারে  এসে  তার  প্রমাণ  মিলল। সূর্যপুরী আম আর লটকনে বাজার ছেয়ে গেছে।

কৃষিবিদ নিখিল চন্দ্র শীল*
*উপপরিচালক (অব.), ডিএই, নারায়ণগঞ্জ; নিউ আজিম ভিলা, ১৮ খানপুর মেইন রোড, নারায়ণগঞ্জ; ০১৭১৮১৭৭৯৮৬


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon